পায়ে জ্বালাপোড়া?

footপায়ের পাতা দুটি যেন মাঝে মধ্যে মরিচ লাগার মতো জ্বলে। কখনো সুঁই ফোটার মতো বিঁধে। ঝিম ঝিম করে বা অবশও লাগে। প্রায়ই এ ধরনের অনুভূতির কথা শোনা যায় রোগীদের মুখে। এ এক বিরক্তিকর ও যন্ত্রণাকর অনুভূতি। নানা কারণে, এমনকি মানসিক
বিপর্যয়েও হতে পারে এই জ্বালা যন্ত্রণা। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পায়ের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলেই এমনটা ঘটে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলা হয় পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি।

নিউরোপ্যাথির একটি বড় কারণ হলো অনিয়ন্ত্রিত ও দীর্ঘদিনের ডায়াবেটিস। রক্তে শর্করার আধিক্য ধীরে ধীরে পায়ের স্নায়ুগুলোকে ধ্বংস করে এ ধরনের উপসর্গ সৃষ্টি করে। কিডনি ও থাইরয়েড সমস্যায়, ভিটামিন বি১২ ও বি১-এর অভাব, মদ্যপান, রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস ইত্যাদি রোগেও পায়ের স্নায়ুতে সমস্যা হয়। কিছু ওষুধের প্রতিক্রিয়ায় পায়ে জ্বালাপোড়া হতে পারে, যেমন: যক্ষ্মা রোগে ব্যবহূত আইসোনিয়াজিড, হূদেরাগে ব্যবহূত এমিওড্যারোন, কেমোথেরাপি ইত্যাদি।

তবে সব সময় পায়ে যন্ত্রণা বা জ্বালাপোড়া মানেই যে স্নায়ুতে সমস্যা বোঝায়, তা নয়।
আরও কিছু কারণে এ ধরনের অনুভূতির সৃষ্টি হতে পারে। যেমন:
– পায়ে ছত্রাক সংক্রমণ
– পায়ে রক্ত চলাচলে সমস্যা
– মহিলাদের মেনোপোজের পর
– অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ

কী করবেন?
জ্বালাপোড়া হঠাৎ শুরু হয়ে খারাপের দিকেই যাচ্ছে বা এর সঙ্গে পায়ের আঙুল বা পাতায়
অনুভূতি কমে যাচ্ছে, অবশ মনে হচ্ছে ইত্যাদি লক্ষণ থাকলে অবহেলা করবেন না। আপনার
পায়ের স্নায়ু ঠিক আছে কি না তা বোঝার জন্য অনেক সময় কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষারও
প্রয়োজন নেই। চিকিৎসক একটি আলপিন বা একটি টিউনিং ফর্ক ব্যবহার করেই পায়ের
অনুভূতিগুলো যাচাই করে নিতে পারবেন।

1. ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন, পায়ের যত্ন নিতে শিখুন।
2. যাঁদের পায়ের স্নায়ু সমস্যা আছে, তাঁরা পায়ের যেকোনো ক্ষতের দ্রুত চিকিৎসা করুন।
পায়ে গরম সেঁক নিতে, নখ কাটতে, জুতা বাছাই করতে সাবধান হোন।
3. পায়ের সমস্যার জন্য সব সময় যে ভিটামিনের অভাবই দায়ী, তা নয়। তাই সব ধরনের
সমস্যায় ভিটামিন বি খেয়ে উপকার পাওয়া যাবে না।
4.  দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমান। প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন।

2 thoughts on “পায়ে জ্বালাপোড়া?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *